Separation procedure of employment || চাকুরী হতে বিছিন্নকরন পদ্ধতি

চাকুরী হতে বিছিন্নকরন পদ্ধতিঃ

বাংলাদেশ শ্রম আইনে  চাকুরী হতে বিচ্ছিন্নকরণের বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে । মানবসম্পদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই এ পদ্ধতি গুলো জানা জরুরী। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী বিচ্ছিন্নকরণ পদ্ধতিগুলো আলোচনা করা হলো ।

জানা জরুরী

১) একজন শ্রমিক বা কর্মী যদি কারখানা হতে চলে যায় তাহলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদেয় যেমন: আইডি কার্ড, ইউনিফরম, কাটার, সিজার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, মোবাইল সীম, চাবি ইত্যাদি বুঝে নেওয়া হয় ।
২) এইচ আর বিভাগ হতে একটি ক্লিয়ারেন্স নেওয়া হয় ।
৩) অপসারন বা বরখাস্ত কৃত কর্মীদের একটি তালিকা সিকিউরিটি বিভাগকে দেওয়া হয় ।
৪) অপসারন বা বরখাস্ত কৃত কর্মীদের একটি ছবি সম্বলিত তালিকা মেইন গেট এ টাংগানো হয় । যাতে কোন অপসারন বা বরখাস্ত কৃত কর্মী কারখানায় প্রবেশ করতে না পারে ।
৫) অপসারন বা বরখাস্ত কৃত কর্মীদের পাওনাদি যদি থেকে থাকে তাহলে এইচ আর বিভাগ কর্তৃক সিকিউরিটি গেট হতে প্রদান করা হবে । অপসারন বা বরখাস্ত কৃত কর্মী কারখানার অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে না ।

Procedures  of separation from employment

(ক) পদত্যাগ বা রিজাইনঃ

১.কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ৬০ (ষাট) দিনের লিখিত নোটিস প্রদান করিয়া চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে পারবে ।

২.অস্থায়ী বা অন্য কোন শ্রমিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের লিখিত নোটিস মালিককে প্রদান করিয়া চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে পারবে ।

৩.যে ক্ষেত্রে শ্রমিক বিনা নোটিসে চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে চান সে ক্ষেত্রে , তিনি উপরের ১ বা ২ এর  অধীনে প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিস মেয়াদের জন্য মজুরির সমপরিমান অর্থ মালিককে প্রদান করিয়া রিজাইন করতে পারবে ।

৪.যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীনে কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকরি হতে ইস্থফা দেন সে ক্ষেত্রে মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপুরন হিসাবে তার প্রত্যেক সম্পূর্ন বৎসরের চাকরির জন্য


(ক) যদি তিনি ৫ (পাচঁ) বৎসর বা তদুর্ধ্ব, কিন্তু দশ বৎসরের কম মেয়াদে অবিচ্ছন্নভাবে মালিকের অধীনে চাকরী করিয়া থাকেন তাহা হইলে ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মজুরী 


(খ) যদি তিনি ১০ (দশ) বৎসর বা তদুর্ধ্ব সময় মালিকের অধীনে চাকরি করে থাকেন তাহা হলে , ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরী ।


৫. উপরের ৪ (চার) এর অধীনে ক্ষতিপুরন এই অধ্যাদেশের অধীনে শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হবে ।


(খ) অব্যহতি বা টার্মিনেশন 


১.মালিক কর্তৃত কোন শ্রমিককে চাকুরী হতে বাদ দিতে হলে প্রতিষ্ঠানের মালিক (ক) কোন স্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ১২০ (একশত বিশ) দিনের 


(খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) দিনের লিখিত নোটিস প্রদান করিয়া চাকরির অবসান করতে পারবেন । 


২.মালিক নোটিস দিতে না পারলে


(ক) কোন স্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ১২০ (একশত বিশ) দিনের

(খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) দিনের মজুরী প্রদান করিয়া চাকরির অবসান করতে পারবেন । 

www.hrprofessionalbd.com

আরো জানতে
Compliance Related Questionnaire & Answer ।। ফ্রি ডাউনলোড করুন

(গ) ছাটাই 


কাজের অপ্রয়োজনীয়তার কারণে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকরীর অবসান ।


১.শ্রমিককে ছাটাইয়ের কারন উল্লেক্ষ করিয়া ১ (এক) মাসের লিখিত নোটিস বা নোটিসের মেয়াদের পরিবর্তে এক মাসের মজুরী প্রদেয় হবে ।


২.ক্ষতিপুরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকরীর জন্য ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরী প্রদেয় হবে। 


(ঘ) বরখাস্ত বা ডিসমিসঃ


অসদাচরনের কারণে মালিক কর্তৃক কোন শ্রমিককে চাকরিচুত্য করা । ইহা হচ্ছে একটি শাস্তিমুলক ব্যবস্থা । 

১. কোনো ফৌজদারী অপরাধের জন্য দন্ড প্রাপ্ত হন অথবা 

২.প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অসদাচরনের অপরাধে দোষী সাবস্ত হন ।


নিম্নলিখিত কাজগুলো অসদাচরণ বলে গণ্য হবেঃ-


 ১. উপরস্থের কোন আইন সংগত বা যুক্তিসঙ্গত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা;

২. মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, প্রতারণা বা অসাধুতা;

৩. মালিকের অধীনে তার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান;

৪. বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়ে এক সঙ্গে ১০ (দশ) দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি।

৫. অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;

৬. প্রতিষ্ঠানের প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লঙ্ঘন;

৭. প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা,অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর ;

৮. কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;

৯. প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা বা অসদাচরণসহ যে কোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন।

১০. মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারিয়ে ফেলা।


অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাবস্থ হলে কোন শ্রমিককে চাকুরী হতে বরখাস্তের পরিবর্তে বিশেষ অবস্থার


পরিপ্রেক্ষিতে নিন্মলিখিত যে কোন শাস্তি প্রদান করা যাবেঃ-


ক. অপসারণ;

খ. নিচের পদে, গ্রেডে বা বেতন স্কেলে অনধিক এক বৎসর পর্যন্ত আনয়ন;

গ. অনধিক এক বৎসরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ;

ঘ. অনধিক এক বৎসরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ;

ঙ. জরিমানা;

চ. অনধিক সাত দিন বিনা মজুরীতে বা বিনা খোরকীতে সাময়িক বরখাস্ত;

ছ. ভৎর্সনা ও সতর্কীকরণ।


শাস্তির পদ্ধতিঃ 


এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্বে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যদি না-

ক. তার বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিতভাবে করা হয়;

খ. অভিযোগের একটি কপি তাকে দেয়া হয় এবং এর জবাব দেওয়ার জন্য অন্তত সাত দিন সময় দেয়া হয়;

গ. তাকে শুনানির সুযোগ দেয়া হয়;

ঘ. তদন্তের পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়;

ঙ. মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।


(ঙ) অবসর গ্রহনঃ


কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্ন হইলে তিনি চাকরি হইলে তিনি চাকরি হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহন করিবেন । ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রত্যেক সম্পূর্ণ চাকুরী বৎসরের জন্য ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরী প্রদান করবেন।


(চ) কর্মস্থলে অনুপস্থিত 


কোন শ্রমিক বিনা নোটিসে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ (দশ) দিনের অধিক কর্মস্থলে অনপস্থিত থাকিলে মালিক উক্ত শ্রমিককে ১০ (দশ) দিনের সময় প্রদান করিয়া এই সর্ম্পকে ব্যাখ্যা প্রদান করিতে এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদানের জন্য নোটিস প্রদান করিবেন এবং এইরুপ ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিথিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকুরীতে যোগদান না করিলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে তাহার আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭ (সাত) দিন সময় প্রদান করিবেন । তাহাতেও যদি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক চাকুরীতে যোগদান অথবা আতœপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হইতে অব্যহতি গ্রহন করিয়াছেন বলিয়া গন্য হইবেন ।


বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানায় নিম্ন অনুরুপ চিঠি পাঠানো হয় ।


১. অনপস্থিতির ব্যাখ্যা প্রধান সহ চাকুরীতে যোগদানের জন্য নোটিশ । 

২. আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রসঙ্গে।

৩. শ্রমিক কর্তৃক সেচ্ছায় চাকুরী হইতে অব্যহতি (রিজাইন) প্রসঙ্গে।


আরো জানতে


(ছ) মৃত্যুজনিত সুবিধাঃ


 মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণঃ যদি কোন শ্রমকি কোন মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্নভাবে অন্ততঃ ০২ (দুই) বৎসরের অধিককাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোন মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনীত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোন পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক বৎসর বা উহার ০৬ ( ছয়) মাসের অতিরিক্ত সময় চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরন হিসাবে ৩০ ( ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহণ করিলে যে অবসর জনিত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।


(জ) ডিসচার্জ


শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে অথবা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে মালিক কর্তৃক কোন শ্রমিকের চাকরির অবসান ।


(১)  কোন শ্রমিককে, জোনের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক অথবা কোন রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়িত, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারনে চাকরি হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে।


(২) ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিক অনূন্য ০১ (এক) বৎসর অবিচ্ছিন্ন চাকুরী সম্পূর্ন করিলে তাহাকে মালিক তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মুল মজুরী প্রদান করিবে।


আরো জানতে



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ