শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ II Necessary steps to increase the skills of the workers

   শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

প্রত্যেকটি কারখানায় উৎপাদনের মূল হাতিয়ার হলো দক্ষ শ্রমিক দক্ষ শ্রমিক যত বেশি হবে উপাদনশীলতা তত বৃদ্ধি পাবে  শুধু শ্রমিক নিয়োগ দিলে হবে না  শ্রমিকদের ধরে রাখতে হবে এবং দক্ষতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে  হবে । নিম্নোক্ত বিষয় গুলো একটি কোম্পানীর জন্য ভালো পরিকল্পনা হতে পারে।

) ট্রেনিং লাইন চালু করতে হবেঃ

) প্রত্যেক লাইনে শ্রমিকদের Employee of the Month  পুরস্কার দিতে হবেঃ 

৩) যেভাবে হোক না কেন পুরাতন শ্রমিক ধরে রাখতে হবেঃ

) শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না , গালাগালি করা যাবে নাঃ

)  শ্রমিকদেরকে কাউন্সিলিং করতে হবেঃ

) নিয়োগ বোনাসঃ

)  সেকশন হেডর সহযোগীতার মনোভাবঃ

৮) স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিৎ করতে হবেঃ

৯) শ্রম আইন অনুসারে সুযোগ সুবিদার ব্যবস্থাঃ


) ট্রেনিং লাইন চালু করতে হবে

নতুন শ্রমিক চলে যাওয়ার মূল কারণ হলো কারখানায় নিয়োগের পরপরই আমরা উৎপাদন আশা করি এবং মনে করি সে একজন পুরাতন শ্রমিকের মত উৎপাদন করবে যখন তাদের নিকট থেকে ধরনের আশাকরি এবং প্রকৃত পক্ষে তারা উৎপাদন করতে পারে না। তখন তারা হতাশ হয়ে পরের দিন থেকে কারখানায় আসে না আমরা সাধারনত কারখানাগুলোতে  নতুন শ্রমিক নিয়োগের পর সরাসরি উৎপাদন ফ্লোরে না দিয়ে তাদের কাজ শেখানোর জন্য নির্দিৃষ্ট সময়ে টেনিং লাইনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কারখানায় নির্দিৃষ্ট একটি  ট্রেনিং লাইন চালু করতে  পারি । ট্রেনিং লাইনে সকল সেকশনে কাজের পারদর্শি একজন ট্রেইনার থাকবেন। ট্রেইনার এর মাষ্টার প্লান অনুসারে নির্দিৃষ্ট সময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তার কর্ম দক্ষতা মূল্যায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সেকশনের নতুন শ্রমিকদের প্রশিক্ষন দেওয়ার মাধ্যমে সকল সেকশনের উৎপাদন লাইনে হস্তান্তর কর এবং এভাবে নতুন শ্রমিক চলে যাওয়া থেকে হ্রাস পাইতে পারে

নির্দেশিকাঃ

)            ট্রেনিং চলাকালীন সময়ে ওভার টাইম করানো যাবে না

)           কোম্পানীর নিয়ম কানুন সম্পর্কে  অন্যান্য প্রশিক্ষন দিতে হবে

)           কোম্পানীর বিভিন্ন বিষয়ে কাউন্সিলিং করাতে হবে

সুভিধাদিঃ

)            স্বল্প সময়ে অপারেটর তৈরী করা সম্ভব

)           কোম্পানী সম্পর্কে এবং কাজের প্রতি শ্রমিকদের আত্ন বিশ্বাস বাড়ে।

)           কিছুদিন কাজ করলে কর্ম পরিবেশের সাথে মিশে যায়

)          আত্ন বিশ্বাস বাড়লে দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারে

)           কারখানায় উৎপাদনের পরিমান দিনদিন বৃদ্ধি পাবে 

আরো জানতে-

বাংলাদেশ শ্রম আইনে১০ দিনের অধিক কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তার করণীয় ও পদ্ধতিঃ Absenteeism letterin Bangla

)           প্রত্যেক লাইনে শ্রমিকদের Employee of the Month   পুরস্কার দিতে হবেঃ 

প্রত্যেক মাসে শ্রমিকদেরকে প্রত্যেক ইউনিটে সব থেকে যে বেশি উৎপাদন করতে পারবে তাকে Employee of the Month পুরস্কৃত করা হবে পুরস্কার দিতে হলে চারটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে

) কাজের দক্ষতা

) কাজের আগ্রহ 

) দীর্ঘ সময় কাজের ইচ্ছা

) মাসিক উৎপাদন

উপরোক্ত বিষয়গুলোকে  একটি কমিটির মাধ্যমে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে

)            সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান

)           সংশ্লিষ্ট সেকশন চীফ

)           মানব সম্পদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি

কিভাবে নির্বাচন করা হবেঃ

) উক্ত কমিটি একটি নির্দিৃষ্ট ফর্মে উপরের বিষয় গুলো ম্যল্যায়নের মাধ্যমে  প্রত্যেক লাইন থেকে জন নির্বাচন করবে

) সম্মানিত কারখানা প্রধান জনের মধ্য থেকে একজনকে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবেন মনোনয়ন করবে 

পুরস্কারের মূল্য

           ) ----------------------/- (----------------  সার্টিফিকেট)


) যেভাবে হোক না কেন পুরাতন শ্রমিক ধরে রাখতে হবেঃ

নতুন শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন কার্য পরিচালনা করা সম্ভব নয় প্রত্যেক কারখানায় উৎপাদনের মূল হাতিয়ার হলো দক্ষ শ্রমিক দক্ষ শ্রমিক ধরে রাখতে হলে তাদের থেকে আগে জানতে হবে কি জন্য তারা চাকুরী করবে না? তাদের কে চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট ফরমে ইন্টারভিউ নিতে হবেতাদের চলে যাওয়ার কারণ জানার পর বিভাগীয় প্রধানসহ মানব সম্পদ বিভাগ তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে প্রত্যেক মাসে ১০০০ শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া সমাধান নয় শ্রমিক ধরে রাখা হলো মূল সমাধান কি কি কারনে শ্রমিক চলে যাচ্ছে তার রুস কস এনালাইস করতে হবে  এবং অনুপস্থিত শ্রমিকদের খোঁজ নিতে হবে কি জন্য তারা আসছে না

আরো জানতে-

Procedures forhiring workers।। কারখানায় শ্রমিক নিয়োগের ধাপ বা পদ্ধতি


) শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না , গালাগালি করা যাবে না

ফ্লোরে সকল শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না তাদের কে সব সময় কাউন্সিলের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। তাদের মধ্যে অনেকেই নতুন তারা আগে কখনও কাজ করেনি  তাদের জন্য নতুন পরিবেশ নতুন মানুষের সাথে কাজ  ইত্যাদী বিষয় গুলো বিবেচনায় এনে তাদেরকে সহযোগিতার মনোভাব তৈরী করতে হবে  প্রথমেই তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কাজের প্রতি তাদের মনোভাব নষ্ট হয় এবং তারা পরের দিন থেকে কারখানায় আসে না এবং ফ্লোরে শ্রমিকদের সাথে যে খারাপ ব্যবহার করবে তার বিরুদ্ধে কোম্পানীর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে


)  শ্রমিকদেরকে কাউন্সিলিং করতে হবেঃ

সেকশনের যারা উদ্ধোতন কর্তৃপক্ষ আছে তাদের ব্যবহার হতে হবে নম্রভদ্র শ্রমিকদের নিকট তাদের বিশ্বা অর্জন করতে হবে সে যা বলবে শ্রমিকরা তাই শুনবে এধরনের হতে হবে এবং সব সময় তাদের সাথে সহযোগিতার মনোভাব তৈরী করতে হবে একজন সেকশন চীফ শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার আগে ভাবতে হবে আমি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে তাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকে না সুতরাং তাদের সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে বুঝাতে হবে ।  বাংলাদেশ শ্রম আইন বিধিমালা অনুসারে তাদের সুবিধা মত ছুটি প্রদান করতে হবে । আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে এক জনকে ছুটি দিলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় না  সুতরাং বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ভাবতে হবে । 

)         নিয়োগ বোনাসঃ

কারখানার কোন শ্রমিক অন্য কোন দক্ষ শ্রমিককে চাকুরীর জন্য নিয়ে আসলে এবং চাকুরিতে যোগদান করানো হলে   যে শ্রমিক অভিজ্ঞ শ্রমিককে নিয়ে আসছে তাকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বোনাস দেওয়া হলে ভালো হবে । এ ধরনের বোনাসের ব্যবস্থা করলে দক্ষ শ্রমিক সহজেই পাওয়া যায় ।

)   সেকশন হেডর সহযোগীতার মনোভাবঃ

যিনি সেকশন চীফ থাকবেন তিনি প্রত্যেক শ্রমিককে মানষিক শান্তি তে রাখতে হবে   যদি রাখতে পারেন তবে কোন শ্রমিকের  ইফেসিয়েন্সী বা কর্ম দক্ষতা কখনও কম হবে না। প্রত্যেক শ্রমিকদের পরিবারের সদস্য মনে করতে হবে সুখ দুঃখে সহযোগীতা করতে হবে   সম্মান করতে হবে। কাউকে মনে কষ্ট দিয়ে কথা বলা যাবে না । তাহলে শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা বাড়বে ।


৮) স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিৎ করতে হবেঃ

শ্রমিকের কর্মদক্ষতা অনেকটা নির্ভর করে তার কর্ম পরিবেশের ওপর । কর্মপরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত হলে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে ।  স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ তৈরীর মাধ্যমে শ্রমিকের কর্মদক্ষতা বাড়ানো সম্ভব ।


৯) শ্রম আইন অনুসারে সুযোগ সুবিদার ব্যবস্থাঃ

 শ্রম আইন অনুসারে সকল ধরনরে সুযোগ সুবদিা প্রদান করতে হবে ।

১) সময় মত মাসকি বেতন

২) ছুটির টাকা

৩) জীবন বীমা

৪) প্রভিডেন্ট ফান্ড

৫) ওভার টাইম

৭) উৎসব বোনাস

৮) সার্বিস বেনিফিট

৯) গ্রাচুইটি

এ ছড়িা আরো অন্যান্য

আরো জানতে-

The main Roles andResponsibilities of admin, HR and compliance department||এডমিন,এইচ আর ও কমপ্লায়েন্সবিভাগের প্রধান প্রধান দায়িত্ব

কারখানার কর্যক্রম দিনদিন বাড়াতে হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ শ্রমিক ধরে রাখতে হবে ভবিষ্যতে আরো উৎপাদন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে হলে অবশ্যই এখন থেকে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে আমাদের এভাবে পরিকল্পনা করতে হবে ভবিষ্যতে আমরা আমাদের কারখানা  কে কোথায় নিয়ে যাব আমাদের ম্যানপাওয়ারের স্যোস কোথা থেকে পাবো বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এইচ আর বিভাগের মাধ্যমে প্রচুর পরিমান শ্রমিক নিয়োগ করেও প্রত্যেকটি কারখানায় দক্ষ শ্রমিক সঙ্কট থেকেই যাচ্ছে ধরনের সমস্যা কোম্পানীর জন্য ভালো খবর নয়  সুতরাং কি করনে শ্রমিক সংকট হচ্ছে আমাদের ভাবা দরকার প্রত্যেকটি কারখানায় দক্ষ শ্রমিক তৈরী করলে হবে না তাদের ধরে রাখার বিষয়টি নিয়ে ও ভাবতে হবে ।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ